প্রকৃতি কেন এত সুন্দর !

প্রকৃতি : স্বপ্নের মতো এক আশ্রয়

প্রকৃতি হলো সেই বিস্ময়কর সৃষ্টি, যা মানুষকে প্রতিদিন নতুন করে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয়। ভোরের প্রথম আলো যখন গাছের পাতার ফাঁক গলে মাটিতে পড়ে, তখন মনে হয় পৃথিবী যেন নতুন করে জেগে উঠেছে। শিশিরভেজা ঘাসে হাঁটার অনুভূতি কিংবা গাছের পাতার ওপর ঝুলে থাকা টলমলে পানির বিন্দু যেন প্রকৃতির এক অনন্য অলংকার।

পাহাড়ের মহিমা

পাহাড় প্রকৃতির গর্ব। উঁচু-নিচু সবুজ পাহাড় যেন দাঁড়িয়ে আছে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন নিয়ে। পাহাড়ের বুক থেকে নেমে আসা ঝর্ণার কলকল ধ্বনি মনকে করে তোলে প্রশান্ত। কক্সবাজার বা বান্দরবানের পাহাড়ি পথে হাঁটলে মনে হয় প্রকৃতি আমাদের সঙ্গে কথা বলছে। পাহাড়ের কোলের গ্রামগুলোতে ছড়িয়ে থাকে প্রকৃতির নির্মল শান্তি।

সমুদ্রের আহ্বান

সমুদ্র প্রকৃতির আরেকটি অনন্য সৌন্দর্য। তার নীল জলরাশি আর ঢেউয়ের গর্জন যেন হৃদয় ছুঁয়ে যায়। সূর্যাস্তের সময় সমুদ্রতটে দাঁড়ালে মনে হয় প্রকৃতি তার সবচেয়ে সুন্দর রঙগুলো একসাথে ছড়িয়ে দিয়েছে আকাশ ও পানির মাঝে। সমুদ্র শুধু নয়নাভিরাম দৃশ্যই দেয় না, আমাদেরকে দেয় জীবনের শিক্ষা—যেমন ঢেউ থেমে থাকে না; আমরাও জীবনে কখনো থেমে থাকতে পারি না।

বনভূমির রহস্য

প্রকৃতির আরেক বিস্ময় হলো বনভূমি। সেখানে লুকিয়ে থাকে অসংখ্য প্রাণী, নানা প্রজাতির পাখি আর রঙিন ফুলের বাহার। সুন্দরবনের গহীনে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল গাছ, বাতাসে দুলতে থাকা পাতা আর বন্য প্রাণীর সুর—সব মিলিয়ে বন যেন রহস্যে ভরা এক জগৎ। বন শুধু আমাদের অক্সিজেন দেয় না, এটি পৃথিবীর প্রাকৃতিক ভারসাম্যও রক্ষা করে।

প্রকৃতির দান ও রক্ষা

প্রকৃতি আমাদের জীবনধারণের জন্য সবকিছুই দিয়েছে—বাতাস, পানি, খাদ্য, ঔষধি গাছ, খনিজ সম্পদ। কিন্তু আমরা মানুষ অযথা বৃক্ষনিধন ও দূষণের মাধ্যমে প্রকৃতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছি। এর ফলে জলবায়ু পরিবর্তন, খরা, বন্যা ও নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে চলেছে। তাই গাছ লাগানো, পানি ও বায়ু দূষণ কমানো, বন্যপ্রাণী রক্ষা—এসব অভ্যাসে পরিণত করতে হবে।

উপসংহার

প্রকৃতি হলো এক অফুরন্ত সৌন্দর্যের ভাণ্ডার, আর তার প্রতিটি অংশ আমাদের জন্য অপরিহার্য। আমরা যদি প্রকৃতিকে ভালোবাসি ও যত্নে রাখি, তবে প্রকৃতি আমাদেরকে চিরকাল শান্তি, সৌন্দর্য ও সমৃদ্ধি দিয়ে যাবে। প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে চলাই মানুষের প্রকৃত জীবনধারা হওয়া উচিত।

  
           

লেখক: TENDING GB

           

প্রকাশের তারিখ: ৩১ আগস্ট ২০২৫

Post a Comment

0 Comments