ক্রিকেট মাঠে যখন ছোট দল বড় দলের মুখোমুখি হয়, তখন প্রায়শই এক রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের জন্ম হয়। এশিয়া কাপ ২০২৫-এর গ্রুপ বি-এর এক ম্যাচে ঠিক এমনটাই দেখা গেল। শক্তিশালী শ্রীলঙ্কার সামনে ছিল আপাতদৃষ্টিতে দুর্বল হংকং। তবে হংকংয়ের ক্রিকেটাররা নিজেদের সেরাটা দিয়ে শ্রীলঙ্কাকে বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয়। শেষ পর্যন্ত লঙ্কানরা কোনোমতে জয় ছিনিয়ে নিলেও, ম্যাচটি প্রমাণ করে দিল ক্রিকেটে কোনো দলই ছোট নয়।
মূল আলোচনা
হংকংয়ের লড়াই:
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে হংকং দারুণ শুরু করে। তাদের ব্যাটসম্যানরা সতর্কতার সঙ্গে খেলেন এবং নিয়মিত বিরতিতে বাউন্ডারি মেরে স্কোরবোর্ড সচল রাখেন। যদিও বড় রান আসেনি, কিন্তু তারা শ্রীলঙ্কার শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের সামনে প্রতিরোধের দেয়াল গড়ে তোলে। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে তারা ৪ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান সংগ্রহ করে, যা শ্রীলঙ্কার মতো দলের জন্য বেশ কঠিন একটি লক্ষ্য।
শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ে ছন্দপতন:
১৫০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কা শুরুতে আত্মবিশ্বাসী ছিল। কিন্তু হংকংয়ের বোলাররা দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে শ্রীলঙ্কাকে চাপে ফেলে দেয়। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে লঙ্কানরা একসময় বেশ বিপাকে পড়ে যায়। ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা একাই দলের হাল ধরে রাখেন। তিনি একপ্রান্ত আগলে রেখে অনবদ্য ৬৮ রান করে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যান।
হাসারাঙ্গার ক্যামিও এবং জয়:
যখন মনে হচ্ছিল শ্রীলঙ্কা বুঝি এই ম্যাচটি কঠিন করে ফেলবে, তখন ত্রাতা হয়ে আসেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। তিনি মাত্র ৯ বলে ২০ রানের এক ঝোড়ো ইনিংস খেলে শ্রীলঙ্কাকে জয় এনে দেন। তার ব্যাট থেকে আসে গুরুত্বপূর্ণ বাউন্ডারি এবং ছক্কা, যা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত ১৮.৫ ওভারেই শ্রীলঙ্কা ৬ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।
এই জয়ে শ্রীলঙ্কা গ্রুপ বি-এর শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে এবং সুপার ফোরে তাদের জায়গা নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে, হংকং তাদের তিনটি ম্যাচেই হেরে এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নিয়েছে। তবে তাদের লড়াকু মানসিকতা ক্রিকেটপ্রেমীদের মন জয় করে নিয়েছে।
বিশেষ আলোচনা: যে কারণে এই ম্যাচটি স্মরণীয়
- পাথুম নিসাঙ্কার পরিণত ইনিংস: যখন দলের বাকি ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হচ্ছিল, তখন নিসাঙ্কা একাই দলকে টেনে নিয়ে যান। তার এই দায়িত্বশীল ইনিংস শ্রীলঙ্কার জয়ের অন্যতম প্রধান কারণ।
- হংকংয়ের বোলিংয়ে চমক: হংকংয়ের বোলাররা শুরু থেকেই দারুণ লাইন-লেন্থ বজায় রাখেন। তাদের স্পিনাররা শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদেরও ভোগাতে সক্ষম হন। এটি প্রমাণ করে, যদি সঠিক পরিকল্পনা থাকে তবে দুর্বল দলও শক্তিশালী দলকে কঠিন চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে।
- প্রেসার গেমে হাসারাঙ্গার পারফরম্যান্স: শেষ মুহূর্তে যখন শ্রীলঙ্কা চাপে, তখন হাসারাঙ্গার মতো একজন অলরাউন্ডার এগিয়ে এসে ম্যাচ শেষ করে দেন। এটি একজন ভালো ফিনিশারের লক্ষণ।


0 Comments