সালাদের নাম শুনলেই অনেকের মুখে আসে ভিন্নরকম ভাবনা—কেউ খেতে ভালোবাসে না, আবার কেউ শুধু শসা-টমেটোই সালাদ মনে করে। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, সালাদ মানে শুধুমাত্র সবজি নয়। যদি এতে ফল, ডালজাতীয় শস্য যেমন মটরশুঁটি ও বিনস, বাদাম, বীজ এবং প্রোটিন যোগ করা হয়, তাহলে শরীর প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ সহজেই পেতে পারে।
সালাদের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা
- ওজন নিয়ন্ত্রণ ও দীর্ঘায়ু: নিয়মিত সালাদ খেলে ক্যালরি গ্রহণ কমে, ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়। গবেষণায় দেখা গেছে ক্যালরি প্রায় ১২% পর্যন্ত কমানো সম্ভব।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, বিশেষ করে ভিটামিন সি ও ই শরীরকে রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়।
- মস্তিষ্কের সুস্থতা: ২০১৮ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন আধা কাপ সালাদ খেলে মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি প্রায় ১১ বছর তরুণ থাকে।
- হজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ: সালাদের আঁশ হজম ধীর করে, পেট দীর্ঘ সময় ভরা রাখে এবং মল নরম রাখে।
- ক্যানসার ঝুঁকি হ্রাস: নিয়মিত সালাদ খাওয়ার অভ্যাস কোলোরেক্টাল ক্যানসার এবং অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায়।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
ডা. রাফি খান, পুষ্টিবিদ: “সালাদ শুধু পেট ভরানোর জন্য নয়, এটি ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবারের একটি প্রাকৃতিক উৎস। নিয়মিত সালাদ খেলে দীর্ঘমেয়াদে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং মস্তিষ্কও সতেজ থাকে।”
ডা. শারমিন আক্তার, হেলথ কোচ: “সালাদের সঙ্গে যদি বাদাম, বীজ, ফল ও প্রোটিন যুক্ত করা যায়, তাহলে এটি শরীরের পুষ্টি ভারসাম্য রক্ষা করে। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং হজমে সাহায্য করে। প্রতিদিন আধা কাপ সালাদ খাওয়া অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারে।”
সালাদ গ্রহণের কিছু টিপস
- সকালে বা দুপুরের খাবারের সঙ্গে সালাদ খাওয়া ভালো।
- সিজনাল ও রঙিন সবজি-ফল ব্যবহার করুন।
- সালাদের সঙ্গে বাদাম, বীজ, ডালজাতীয় খাবার যোগ করলে প্রোটিন এবং ফাইবার বৃদ্ধি পায়।
- অতিরিক্ত ড্রেসিং বা তেল ব্যবহার না করলে ক্যালরি কম থাকে।
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় সালাদ অন্তর্ভুক্ত করা দীর্ঘায়ু, সুস্থ মস্তিষ্ক এবং রোগমুক্ত জীবন নিশ্চিত করতে সহায়ক। সালাদ শুধু স্বাস্থ্য নয়, এটি একটি জীবনধারার অংশ হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।



0 Comments